রাজ্য এসএসসি (SSC) নিয়োগের নতুন নিয়ম নিয়ে জটিলতা কাটছে না। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে দিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শুক্রবার স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার শুনানি আগামীকাল, শনিবার, হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিতর্কের সূত্রপাত কোথায়?
২০১৬ সালের এসএসসি-র গোটা প্যানেল বাতিল হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনে এসএসসি নতুন বিজ্ঞপ্তি এবং নতুন বিধি প্রকাশ করে। কিন্তু এই নতুন বিধি নিয়েই আপত্তি তোলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
তাঁদের মূল প্রশ্ন ছিল:
- কেন পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হবে?
- কেনই বা বয়সের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে?
- আদালত দ্বারা ‘চিহ্নিত অযোগ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা ব্যক্তিদের কেন আবার পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে?
এই প্রশ্নগুলো তুলেই তাঁরা প্রথমে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
হাই কোর্টের রায় কী ছিল?
বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন খারিজ করে দেয়। হাই কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগবিধি মেনেই পরীক্ষা হবে। তবে, আগের নির্দেশ অনুযায়ী ‘চিহ্নিত অযোগ্য’ প্রার্থীরা এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: বর্তমানে কোন কোন চাকরির দরখাস্ত চলছে জানুন এবং আবেদন করুন।
কেন আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ চাকরিপ্রার্থীরা?
হাই কোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই চাকরিপ্রার্থীরা এখন সুপ্রিম কোর্টে। তাঁদের মূল দাবিগুলো হলো:
- অভিজ্ঞতার জন্য বাড়তি ১০ নম্বর দেওয়ার বিষয়টি বাতিল করতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা বা অন্যান্য ক্ষেত্রে নম্বর বিভাজনে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেটিও বাতিল করতে হবে।
এই দাবিগুলো নিয়েই স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এর আগে ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছিল। সে সময় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে চাকরিহারা শিক্ষকদের নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে হবে এবং এসএসসিকে এর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে, ‘চিহ্নিত অযোগ্য’রা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ মেনেই এসএসসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় এবং আবেদন করার জন্য পোর্টালও খুলে দেয়। কিন্তু এরপরই নতুন বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। গত সোমবার রাজ্য, কমিশন এবং চাকরিপ্রার্থী— তিন পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাই কোর্ট গত বুধবার এই মামলায় রায় দেয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধেই এবার চাকরিপ্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে গেলেন। এখন আমাদের সকলের দৃষ্টি থাকবে পরবর্তী শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট কি আপডেট দেয় সেইদিকে।